Friday, February 20, 2015

ফরেক্স নিয়েই সবকিছু part 3

ফরেক্স নিয়েই সবকিছু

কারেন্সি জোড়/পেয়ার

ফরেক্স ট্রেডিং হল একই সাথে একটি কারেন্সির ক্রয় এবং অন্য কারেন্সির বিক্রয়। কারেন্সি কোন ব্রোকার অথবা ডিলারের মাধ্যমে এবং Pair বা জোড়ায় ট্রেড করা হয়।
উদাহারনসরূপঃ ইউরো ও ইউ. এস. ডলার এর জোড় EUR/USD অথবা ব্রিটিশ পাউন্ড ও জাপানিজ ইয়েন এর জোড় GBP/JPY.
আপনি যখন ফরেক্স ট্রেডিং করবেন, আপনাকে Pair বা জোড় এর মাধ্যমে ক্রয়/বিক্রয় করতে হবে।

Tug of war

মনে করুন, এই রশির দুই প্রান্তে দুটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা রয়েছে। এক্সচেঞ্জ রেট ওঠা-নামা করে, কখন কোন কারেন্সি শক্তিশালী তার ওপর ভিত্তি করে।

প্রধান কারেন্সি পেয়ার-সমূহ:

নিচের কারেন্সি পেয়ারগুলোকে প্রধান কারেন্সি পেয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কারেন্সি পেয়ার গুলো USD পেয়ার এবং সহসাই ট্রেড করা হয়। এই প্রধান পেয়ার গুলোর তারল্য সবচেয়ে বেশি এবং এগুলো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ট্রেড করা হয়।

প্রধান ক্রস-কারেন্সি অথবা অপ্রধান কারেন্সি পেয়ার-সমূহ:
ইউ. এস. ডলার ব্যাতিত কারেন্সি পেয়ারসমূহকে ক্রস-কারেন্সি পেয়ার অথবা শুধু ক্রস পেয়ার বলা হয়। প্রধান ক্রসগুলো অপ্রধান কারেন্সি পেয়ার নামেও পরিচিত। সবচেয়ে বেশি ট্রেডকৃত ক্রস পেয়ারগুলো এসেছে - EUR, GBP এবং JPY থেকে।

Euro Crosses


Yen Crosses


Pound Crosses


Other Crosses


Exotic Pairs

একটি প্রধান কারেন্সির সাথে আরেকটি কারেন্সি পরিপুরক হিসেবে যেই পেয়ারে যুক্ত হয়, তাকে Exotic পেয়ার বলে।

কিছু কিছু ফরেক্স ব্রোকারে এই কারেন্সি পেয়ারগুলো ট্রেড করা যায়। এগুলো প্রধান এবং ক্রস পেয়ার গুলোর মত অত্যাধিক ট্রেড করা হয়না।
Exotic পেয়ারগুলোর স্প্রেড EUR/USD অথবা USD/JPY এর তুলনায় দুই অথবা তিন গুন বেশি। তাই যদি আপনি এই Exotic পেয়ারসমূহ ট্রেড করতে চান, তবে তা ভেবে করবেন।

কিভাবে ফরেক্সে লাভ/লস হয়

ফরেক্স মার্কেটে আপনি বাই (buy) অথবা সেল (sell) করবেন।
একটি ট্রেড খোলা খুবই সোজা। ট্রেড খোলার পদ্ধতি সহজ এবং আপনার যদি স্টক মার্কেটে ট্রেড করার অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি তা আর তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন।
মনে করুন আপনি ১.১৮০০ এক্সচেঞ্জ রেটে  EUR/USD - তে ১০,০০০ ইউরো কিনলেন $১১,৮০০ ডলার দিয়ে। দুই সপ্তাহ পর EUR/USD এক্সচেঞ্জ রেট বেড়ে ১.২৫০০ হল। তখন আপনি $১২,৫০০ ডলারে তা বিক্রি করলে আপনার লাভ হবে $৭০০ ডলার।
এক্সচেঞ্জ রেট হল একটি কারেন্সির সাপেক্ষে আরেকটি কারেন্সির দামের অনুপাত। যেমনঃ USD/CHF এর এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে, কত ইউ. এস. ডলার এর বিনিময়ে ১ সুইস ফ্রাঙ্ক কেনা যাবে, অথবা ১  ইউ. এস. ডলার কিনতে কত সুইস ফ্রাঙ্ক প্রয়োজন।

কিভাবে ফরেক্স কোটেশন পড়তে হয়

প্রতিটি ট্রেডে আপনি একই সাথে একটি কারেন্সি কিনেন এবং আরেকটি বিক্রি করেন। তাই ফরেক্স মার্কেটে কারেন্সি পেয়ারের দাম কোটেশন এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
GBP/USD এর ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট নিম্নরূপঃ
GBP/USD quote

স্লাশ (/) এর আগের কারেন্সিকে বলা হয় বেস (base) কারেন্সি এবং স্লাশ (/) এর পরের কারেন্সিকে বলা হয় কিউটো (quote) কারেন্সি।

এখানে GBP হল বেস (base) কারেন্সি এবং USD হল কিউটো (quote) কারেন্সি।
বাই (buy) করার সময়, এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি দিতে হবে। উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড কেনার জন্য ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার দিতে হবে।
সেল (sell) করার সময়,  এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি সেল করলে কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি পাওয়া যাবে। উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড বিক্রি করলে আপনি ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার পাবেন।
বেস কারেন্সি হল বাই ও সেল এর মূল ভিত্তি। যদি আপনি EUR/USD বাই করেন, তবে আপনি বেস কারেন্সি EUR কিনছেন এবং একই সাথে কিউটো কারেন্সি USD বিক্রি করছেন। সহজ কথায়, EUR কেনা, USD বিক্রি করা।
আপনি কারেন্সি পেয়ারটি বাই করবেন যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে, কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি শক্তিশালী হবে। এর আপনি সেল করবেন যদি আপনি মনে করেন কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি দুর্বল হয়ে যাবে।

লং/সর্ট (long/short):


প্রথমে আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি বাই করবেন না সেল করবেন।
আপনি যদি বাই করতে চান (বেস কারেন্সি কেনা এবং কিউটো কারেন্সি বিক্রি করা), তার মানে আপনি চাচ্ছেন বেস কারেন্সির দাম বেড়ে যাক এবং আপনি সেটা বিক্রি করে দিবেন আরও বেশি দামে। ট্রেডারদের ভাষায় একে বলে লং (long) অথবা লং পজিশন নেয়া। মনে রাখবেন, লং = বাই (long = buy)।
আপনি যদি সেল করতে চান (বেস কারেন্সি বিক্রি করা এবং কিউটো কারেন্সি কেনা), তার মানে আপনি চাচ্ছেন বেস কারেন্সির দাম কমে যাক এবং আপনি সেটা কিনবেন আরও কম দামে। ট্রেডারদের ভাষায় একে বলে শর্ট (short) অথবা শর্ট পজিশন নেয়া। মনে রাখবেন, শর্ট = সেল(short= sell)।
Long dog, short dog

বিড/আস্ক (bid/ask):






EUR/USD quote
সব ফরেক্স কোটেশনে ২ টি প্রাইস দেখান হয়। বিড এবং আস্ক। প্রায় সবক্ষেত্রে বিড প্রাইস, আস্ক প্রাইস থেকে কম হয়।
বিড হল এমন একটি প্রাইস যে দামে ব্রোকার কিউটো কারেন্সির পরিবর্তে বেস কারেন্সি কিনতে চায়। অর্থাৎ, সেল করার জন্য বিড হল সবচেয়ে ভাল প্রাইস।
আস্ক হল এমন একটি প্রাইস যে দামে ব্রোকার কিউটো কারেন্সির পরিবর্তে বেস কারেন্সি বিক্রি করতে চায়। অর্থাৎ, বাই করার জন্য আস্ক হল সবচেয়ে ভাল প্রাইস।
বিড এবং আস্ক এর পার্থক্যই স্প্রেড (spread) নামে পরিচিত।
EUR/USD -র উপরের কোটেশনে বিড প্রাইস হল 1.3456 এবং আস্ক প্রাইস হল 1.3458.
অর্থাৎ, এখানে স্প্রেড 2 পিপস।
আপনি যদি সেল ক্লিক করেন তবে আপনি 1.3456 -এ সেল করবেন। আর যদি বাই ক্লিক করেন, তবে আপনি 1.3458 -এ বাই করবেন।
(প্রথম প্রকাশঃ বিডিপিপস ফরেক্স স্কুল)


পরের টিউনে ডেমো অ্যাকাউন্ট ওপেনিং এবং কিভাবে ট্রেড করতে হয় তা প্রকাশ করা হবে। আশা করি আগামীকাল থেকে আমরা ডেমো ট্রেডিং শুরু করতে পারব।

No comments:

Post a Comment